শাবান মাহমুদ একজন তথ্য সন্ত্রাসী, তাকে ৫৭ ধারায় গ্রেফতার করা হোক ।। মোটাদাগের কথা
আমরা জানি শাবান মাহমুদ একজন দায়িত্বশীল সাংবাদিক। শুধুই সাংবাদিক না। সে সাংবাদিকদের নেতা। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের নির্বাচিত মাহাসচিব সে। বিশাল ব্যাপার। তবে এই সংগঠন কোথায় কবে সাংবাদিকদের জন্য কী করেছে তা আমার জানা নেই। আর ‘জানা নেই’ সেটা আমার একান্তই ব্যক্তিগত অজ্ঞতা।
কিছু দিন আগে অভিনয় শিল্পী শমী কায়সার তার হারানো ফোন উদ্ধারের আশায় সকল সাংবাদিকের শরীর তল্লাশি করিয়েছেন তাঁর ব্যাক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষির দ্বারা। এমনটা কেউ করাতে পারে না। এটাও একটা বে-আইনি কাজ। ধরে নিচ্ছি শমী কায়সার এমন কাজ করে ফাঁসির যোগ্য অপরাধ করেছেন।
এই অপরাধের জন্য ক্ষমা চাওয়ার জন্য অসংখ্য ভুলে ভরা একটি চিঠি শমী কায়সারকে পাঠানো হয়েছে। সেটাকে চিঠি না বলে হুমকি পত্রও বলা যায়। চিঠি খানা আমি কয়েকবার পড়েছি। পড়ে মনে হয়েছে বস্তির ঝগড়াটে মহিলার প্রলাপ। এই করবো সেই করবো, দেখিয়ে দেবো, বুঝিয়ে দেবো, শিখিয়ে দেবো এমন বাক্যে ভরা সে চিঠি। সব শেষে নিচে তারা লিখেছে ‘বিবৃতিতে বিএফইউজে ও ডিইউজে নেতারা, এ ধরণের নিকৃষ্টতম দুর্ব্যবহারের জন্য সাংবাদিক সমাজের কাছে আনুষ্ঠানিক ভাবে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার আহবান জানিয়ে বলেন, নতুবা যত বড় সেলিব্রেটিই হোন না কেন তার সংবাদ বর্জন করা হবে। প্রয়োজন হলে তার সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ-খবর নিয়ে সাংবাদি সমাজ নিয়মিত সংবাদ পরিবেশন করে জাতিকে বিস্তারিত জানাতে বাধ্য করবে’।
এই ‘বিস্তারিত’ মানে অনেক কিছু। কুৎসা, কেলেঙ্কারি, হাড়ির খরব এইসব। যা না আছে তাও মনের মাধুরি মিশিয়ে লিখবেন তারা। এটা সাংবদিকের আচরণ? এরা সাংবাদিক? কোথায় শিখেছে এরা সাংবাদিকতা? সাংবাদিকদের নীতিতে কী এসব লেখা আছে? এমন নোংরা মানসিকতা নিয়ে সাংবদিকতা করেন কীভাবে ভাইসকল? জাতি জানতে চায়। চিঠির শুরুতে উল্লেখ করা হয়েছে উনারা শহীদুল্লাহ্ কায়সারের উত্তরসুরী। আচ্ছা উত্তরসুরী কাকে বলে? এখন যারা সাংবাদিকতা করেন তাঁরা কে কে শহীদুল্লাহ কায়সারের সাথে সাংবাদিকতা করেছেন? আর এই পরিবারকে তারা সম্মান দিয়ে কোথায় তুলেছে?
তারা বারবার এটা বলার চেষ্টা করেছে ‘ক্ষমা না চাইলে খবর আছে।’ আরে ভাই একজন অন্যায় করেছে। সে যে অন্যায়ই হোক আর অন্যায়কারী যেই হোক, ক্ষমা চাওয়া না চাওয়ার তার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। সে ক্ষমা না চাইলে আপনি জোর করে ক্ষমা চাওয়াবেন? এটা কেমন কথা? আপনি সে অন্যায় সহ্য করতে না পারেন তো আইনের আশ্রয় নিন, তাকে হুমকি দিচ্ছেন কেন? এটা তো ফৌজদারি অপরাধ। তথ্য সন্ত্রাস। তথ্য-প্রযুক্তি আইনে আপনাকে গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করা উচিৎ। শমী কায়সারকে যদি আপনি এমন হুমকি দিতে পারেন তো অন্য সাধারণ মানুষের সাথে কী করেন? এমনটা দেখেছি মফস্বল প্রতিনিধিদের করতে। আপনারা কী ঐ মানের সাংবাদিক মনে করছেন নিজেদের? হতেও পারে....
এতো গেলো চিঠি। তার পরে বিএফইউজের নির্বাচিত মহাসচিব তাঁর ব্যক্তিগত ফেইসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেছেন ‘শমি কায়সার? সাংবাদিকরা আপনার বাবা, আমরা মা, এবং আপনাকে খুব বেশি সম্মান করে, এটিই আমাদের অপরাধ? এবার বুঝবেন নীরিহ সাংবাদিক সমাজের কাছে আপনাদের কত গোপন খবর আছে?’ একজন মানুষের গোপন খরব পত্রিকায় প্রকাশের অধিকার আপনাকে কে দিয়েছে? এটা কোন ধরণের সাংবাদিকতা? সারা জীবন কী এসবই করে বেড়িয়েছেন? ব্লাকমেইলিং? ছ্যাঁচড়ামি?
ঐ চিঠিতে এবং শাবান মাহমুদের হুমকি সম্বলিত স্ট্যাটাসে বারবার ‘সাংবাদিক সমাজ’ শব্দটা উল্লেখ করা হয়েছে। তার মানে সে বা তারা কৌশলে এটা বোঝাতে চেয়েছে এদেশের সব সাংবাদিকেই ওনাদের মতো এমন রুচিহীন এবং তথ্য সন্ত্রাসী করে বেড়ায়। সেটা কিন্তু মোটেই নয়! আপনার লেজ কাটা গেছে বলে অন্যদেরও লেজ কাটবেন এটা কেমন কথা?
এখন তাকে আমরা কী নামে ডাকতে পারি? ব্লাকমেইলার? তথ্য সন্ত্রাসী? শাবান মাহমুদ আপনাকে বলছি এই স্ক্রীন শটটি সর্বত্র ছড়িয়ে গেছে। আপনার মতো সাংঘাতিক সাংবাদিকেরা এখন যে জঘন্য নোংরামিটা করবেন তা সবাই আগেই অবগত হয়ে গেল। এখন শমী কায়সার সম্পর্কে যা লিখবেন সব মিথ্যাচার। যদি সত্যিও হয় তবুও আর পাব্লিক তা বিশ্বাস করবে না। ব্যাক্তিগত ভাবে আমি যদি শমী কায়সার সম্পর্কে নেগেটিভ সংবাদ দেখি তবে তার নিচে আপনার এই হুমকির স্ক্রীন শট মন্তব্যের ঘরে পোস্ট করে দেবো। আপনার মতো সাংবাদিক যদি এদেশের সাংবাদিকদের নেতা হয় তাহলে সে দেশে সাংবাদিকতা কোথায় গিয়ে ঠেকেছে তা ভাবতেও শিউরে উঠতে হয়।
তবে আশার কথা এই যে এই সব সংগঠন অনেক ভালো সাংবাদিকই পোছেও না। আপনার মতো সাংঘাতিক সাংবাদিকের কারণেই এদেশের সাংবাদিকতা আজ প্রশ্নবিদ্ধ। আপনি কোথায় শিখেছেন সাংবাদিকতা? কে বা কারা আপনার ওস্তাদ? তাঁরা আপনাকে এসব শিখিয়েছেন? মনে হয় না....
আপনি সাংবাদিকতায় কোথায় কবে কোন অবদান রেখেছেন তা আমার জানা নাই। তবে আপনার মতো কূপমন্ডুকেরা সাংবাদিকতার মতো মহান পেশা ছেড়ে না গেলে মানুষ এই পেশার অন্য মানুষদের মুখে হাগু করতে চাইবে। আপনার দৌড় তো ঐ প্রেস ক্লাব বিএফইউজে, ডিউজে পর্যন্ত তা বোঝাই যায় আপনার ভাষা দেখে। সাংবাদিকতার আন্তর্জাতিক পর্যায় কী তা আপনি জানেন বলে আমার মনে হয় না। আপনাকে আমার কখনও বেধাবী কিছু মনে হয়নি। আপনি কোনদিন কোন রিপোর্টে প্রমিত শুদ্ধ বাংলায় কথা বলতে পারেনি। চাইলে পুরোন রিপোর্টগুলো শুনে দেখতে পারেন।
আর একটা কথা বাংলা কীভাবে লিখতে হয় তা আরো শেখেন। আমার ধারণা আপনার রিপোর্ট এডিট করতে করতে সাবএডিটরদের রস বের হয়ে যায়। কোথায় দাড়ি কোথায় কমা কোথায় প্রশ্নবোধক দিতে হয় আপনি সেটুকুও শেখেন নি।
সব শেষে আপনাকে একটা কথা বলি- প্রোফাইল পিকচারে প্রধানমন্ত্রীর সাথে ছবি দিয়ে নিজের পশ্চাৎদেশ আর হাতে খুঁজে না পেয়ে বৈঠা দিয়ে সৌচকর্ম করেন তা বোঝাই যায়। তবে এটা মাথায় রাখবেন শমী কায়সারও শহিদুল্লাহ কায়সার আর পান্না কায়সারের মেয়ে। নড়ে চড়ে বসলে কিন্তু আপনারও পরিধারেন বস্ত্র হরণ হতে পারে।
No comments