Header Ads

CODESMITE
  • সাম্প্রতিক লেখা:

    হিন্দু শূন্য বাংলাদেশ চাই ।। সাইফুল বাতেন টিটো



    প্রায়ই পত্র পত্রিকায় দেখা যায় একই পরিবারের আট জন কিংবা দশ জন বা পাঁচজন একসাথে হিন্দু ধর্ম ছেড়ে মুসলিম হয়েছে। পত্রিকায় সবার ছবিও আসে। কিন্তু নওমুসলিমদের কারো মুখের দিকে আর তাকানো যায় না। বিষাদে ভরা থাকে। কারো মুখে হাসি তো দুরে থাক, মনে হয় কী এক গভীর বেদনা ছেয়ে আছে পুরো ছবিটি জুড়ে। কিন্তু যার কাছে কলেমা পড়ে তারা মুসলমান হলো ঐ ছবিতে সেও থাকে। সে কিন্তু তার ৩২ দাঁত মেলে ধরে। মনেহয় বিশ্ব জয় করেছে। আসলে তো বিশ্ব না তার ধর্ম অনুযায়ী সে যদি সবচাইতে ছোট জান্নাতও পায় তাও এই পৃথিবীর দশটা পৃথিবীর সমান। বিশাল লোভের ক্যানভাস।

    হিন্দুরা কেন মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করে? ০.০০১% হিন্দু হয়তো লোভে পড়ে, খ্যাতির আশায় এই ভাইরাল ভাইরাসের যুগে ভাইরাল হওয়ার আশায় মুসলমান হয় বাকিরা কেন হয় তা বুঝতে হলে পুরো লেখাটা ধৈয্য ধরে নিরপেক্ষভাবে পড়তে হবে। 

    গাজীপুরের ঘটনা। সেখানকার এক প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক জোর করে তার হিন্দু ছাত্রদের ইসলাম ধর্মের বই পড়তে দিচ্ছে, মুসলমান হতে বলছে। একদিন দুইদিন না। দীর্ঘদিন ধরে। মানে একজন সরকারী চাকারীজিবি কীভাবে এই হিন্দুদের ধর্মান্ত করণের সাথে জাড়িত খেয়াল করুন।

    এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বাংলাদেশের প্রতিটি যায়গার একটা নিয়মিত চিত্র এটি। এমনকি খোদ ঢাকা শহরের বড় বড় ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলেও। আমার নিজের এক ক্লাসমেটের ছেলে ফোরে পড়ে। অনেক বড় একটা স্কুলে। তার ক্লাসমেটেরা তাকে মুসলিম হতে বলে। ক্লাস ফোরের একটি শিশু তার ক্লাসমেটকে মুসলিম হতে বলছে। বলছে তোদের মুর্তি তো মাটির বানানো। সে কী করতে পারে?

    এটা জেনে আপনার কেমন লাগলো? এদেশের প্রতিটি যায়গার এইকই চিত্র। একটা ক্লাস ফোরের শিশুর মধ্যে এই কনসেপ্ট কী ভাবে ঢুকলো? কে ঢুকালো যে একজন হিন্দুকে মুসলিম বানানো যায়? ও তো এখনো প্রতি রাতে বিছানা ভিজায়। ও ধর্মের কী বোঝে? একটা শিশু কীভাবে বলে আমি সৌম্য সরকারে সাথে দেখা করতে চাই না, কারণ ও তো হিন্দু প্লেয়ার। এই বিষয়টি আপনাদের ভাবায়নি? ঐ শিশুটির বয়স কতো আমি জানি না, কিন্তু ওর পড়ে যাওয়া সবগুলো দাঁত এখোনো সবগুলো ওঠেনি, এমনকি কিছু দাঁত পড়েওনি। সেই শিশু কেন বলল সৌম্য সরকার হিন্দু তার সাথে দেখা করবো না? বলে সে তার বাবার দিকে এমন একটা লুক দিলো যে লুক বলে দিচ্ছে এই হিন্দু বিদ্বেষ ও ওর বাবার কাছ থেকেই পেয়েছে। একটু বোঝার চেষ্টা করুন, কোথা থেকে কখন কোন বয়সে কার দ্বারা একটি শিশুর মনে হিন্দু বিদ্বেষ রোপিত হলো। সে দেশে পূজোর আগে প্রতিমা ভাঙা হবে না তো কোথায় ভাঙা হবে?

    সাংবাদিক কিন্তু জিজ্ঞেস করলো না যে কী সমস্যা একজন হিন্দুর সাথে দেখা করলে? বরং বলল একটা কেটে ফেলে দেয়া হবে। কিন্তু তারপরও ভিডিওটি বাইরে এসেছে।

    গাজীপুরে যে প্রধান শিক্ষক কাজটি করছে সেকি নতুন করছে? উত্তর না। হয়তো বহুবছর ধরেই করছিলো, এতোদিন কেউ কথা বলেনি, এই প্রথম কেউ কথা বললো। অথবা আগেও প্রতিবাদ করেছে কিন্তু আমরা কেউ জানিনি। এবার প্রশ্ন হলো এই কাজটি কি সে অপরাধ করেছে? এই দেশের ৯৭% মানুষ বলবে না! সে কেন অপরাধ করবে? সে তো ভালো কাজই করেছে। ইসলামের সেবা করেছে। এটা তো ইসলাম সম্মত। সে শুধু ভালো কাজই করেনি, সে ইবাদত করেছে। এটা তার ইমানি দায়িত্ব। এই নির্দেশনা কোনো হাদিসের নির্দেশনা না তো! সরাসরি কোরানের নির্দেশ। এটাই শান্তির ধর্ম ইসলাম। এটা আপনাকে স্বীকার করতেই হবে।




    এটা নিয়ে কা কু করার কোনোই অবকাশ নেই। এটা তো এখন ৯৭% মুসলমানদের দেশ, তারা ১০০% হতে চায়। আর ১০০% হলেই তো শরিয়া আইন বাস্তবায়ন করা যাবে। এর জন্য অনেক বড় বড় প্রজেক্ট রয়েছে। কীভাবে হিন্দুদের দাওয়াত দিয়ে মুসলমান করতে হবে তার উপর কোর্স চালু আছে রীতিমতো। সেখান থেকে কোর্স শেষ করে তার দিকে দিকে বেরিয়ে পরছে হিন্দুদের মসলিম বানাতে। তার অনেক ভিডিও স্যোসাল মিডিয়া বহুবার ভাইরাল হয়েছে। সুতরাং কেউই এই প্রধান শিক্ষকের বিচার চাইবে না এটাই স্বাভাবিক। বরং তাকে আইনের আওতায় আনা হলে এদেশের লাখ লাখ তৌহিদি জনতা মিছিলও নামাতে পারে। কে বলতে পারে হয়তো ঐ এলাকায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি পুজা মন্ডপই হয়তো পোড়ানো শুরু করলো। এটা এখন খুবই স্বাভাবিক ঘটানা আমাদের দেশে। প্রতিদিন ঘটছে। ‘‘আগে দূর্গ পূজার খবর পেতাম ঢাক ঢোলের শব্দ শুনে আর এখন প্রতিমা ভাঙার নিউজ পড়ে বুঝতে পারি পূজা এসেছে।’’ এটা এদেশের ব্লগার অ্যাক্টিভিস্টদের অনেক পুরাতন একটা স্ট্যাটাস। প্রতিবছর আমি সহ অনেকেই দেয়।

     

    এদেশে ১০০% মুসলমান বানাতেই হবে। আর তার জন্য সবচাইতে নমর পদ্ধতি হচ্ছে হিন্দুদের গিয়ে মুসলমান বানানো। প্রথমে নরম ভাবে দাওয়াত দিতে হবে। তারপর যদি সেই নরম কথায় কাজ না হয় তাহলে অপেক্ষকৃত শক্ত ভাবে বলতে হবে। এর সর্বশেষে তাদের ঘববাড়িতে আগুন পর্যন্ত দেয়ার নির্দেশনা কোরানে দেয়া আছে। আর সেটাই তো চলছে। সুতরাং যদি কেউ কাউকে মুসলমান হতে বলে বা একটু জোর করে সেটা তো মুসলামানদের কাছে কোনো ভাবেই অপরাধ না। অতএব জেলা প্রশাসকের এখানে কী করার আছে? এতে হিন্দুদের অনুভুতিতে আঘাত লাগলো না মন্দির ভাঙলো এটা এদশের ৯৭% মুসলামনাদের কাছে কোনো বিষয়ই না। কারণ এই প্রেরণাবাণী এদেশের মুসলামনেরা প্রতি শুক্রবার খুদবায় শোনো, এলাকার মাহফিলে শোনে, সেই মাহফিল রেকর্ড করে তার ভিডিও দেখে, সেই মাহফিল আবার ফেইসবুকে দেখে, ইউটিউবে দেখে, সকালে নাস্তা করতে গেলে রেস্টুরেন্টে বাজতে থাকে। বাসে উঠলে বাসে একই ওয়াজ চলে, ব্যাঙ্কের এটিএম বুথের দারওয়ান মোবাইলে শোনে, রিক্সায় যাবেন রিক্সাওয়ালা তার মোবাইলে বাজায়। আপনি যাবেন কই? আমি কি মিথ্যা বলেছি? এই পুরো বিষয়টি ঘটেছে বিগত ২০১০ থেকে ২০২২ সালে মধ্যে, অর্থৎ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে।

    আসলে এতো ত্যানা পেচিয়ে লাভ নাই, যা আসল কথা হলো হিন্দু শূণ্য বাংলাদেশ চায় এদেশের ৯৭% তৌহিদি জনতা। আমার মতো দুয়েকজন ব্লগার অ্যাক্টিভিস্ট কিংবা এদশের হিন্দুরা কি চায় যে গোনার কারোই সময় নেই। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে যখন এদেশে একজন হিন্দুও থাকবে না তখন কী করিবে এই জাতী? পার্সেন্টেজ নিয়ে কাদের সাথে অহংকার করিবে? কারোর সাথে না কারো সাথে লাগালাগি থাকবেই। 

    এর কোনো প্রতিকার নাই। কেউ করতে পারবে না। আসলে কেউ করার চেষ্টাই করবে না। প্রথমত ভেটের রাজনীতের জন্যই হিন্দুদের এখন আর কোনো দলেরই দরকার নেই। আর আওয়ামী লীগ সরকারের তো ভোটেরই দরকার নেই। সুতারাং ঐ যে সামান্য কয়েকজন হিন্দু আছে এদিকসেদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে ওদের পারলে মুসলমান বানিয়ে ফেল, নাহলে এমন অবস্থা সৃষ্টি কর যাতে ওরা দেশ থেকে পালিয়ে যায়। তার উপর ওদের সম্পত্তি তো রইলোই। এদিক ওদিক দুইদিকেই লাভ। নবী মোহাম্মাদের বংশধর দাবীকারী এনায়েত উল্লাহ আব্বাসি তো বলেই  ‘‘হিন্দুদের জমি দলখ করে খাওয়া ঠিক না। তবে এটা এমন কোনো পাপ না যে আপনাকে জাহান্নামে যেতে হবে।’’
    সুতারং যা চলছে চলুক.... 

    সাইফুল বাতেন টিটো
    ৩০ আগস্ট, ২০২২ তারিখ এর লেখা। 

    No comments