Header Ads

CODESMITE
  • সাম্প্রতিক লেখা:

    'ওর সাথে আমার একটা সেলফি আছে, আমি কি সুইসাইড করব?' ।। মোটাদাগের কথা

    এক মিডিয়ার ছোটবোন ইনবক্স করেছে
    - ভাইয়া আমি বোধহয় সুইসাইড করব। 
    - কেন কি হয়েছে রে? 
    - ঐ জানোয়ারটার সাথে আমার একটা সেলফি আছে। 
    আমি বুঝতে পাররলাম ও কার কথা মিন করছে।
    - তো? 
    - আপনি তো আমার ফ্যামিলি চেনেন।

    হ্যাঁ চিনি, বেশ ভালো ভাবেই চিনি। ওর বাবা একজন ব্যাংকার, মা স্কুল শিক্ষক বড় ভাই মিলিটারি অফিসার। মেয়েটির নাম আমি বললে মোটামুটি অনেকেই চিনবেন তাই নামটা আর বলছি না। বেশ কয়েকটা বিজ্ঞাপন করেছে, নাটক করে নিয়মিত, এমনিতে সে থিয়েটার কর্মী। ২০০৯ সালে ওর পরিবার এক ধরনের আমার কথার উপর ভিত্তি করে মিডিয়ায় কাজ করতে দেয়। মিডিয়ায় অনেকের অনেক ধরনের স্ক্যান্ডেল থাকলেও ওর এই সাত আট বছরে এখনও কোন স্ক্যান্ডেল বের হয়নি।

    - সেলফি আছে তো কি হয়েছে? এতে আত্মহত্যা করার কি আছে? 
    - ভাইয়া একে একে সবার সেলফি প্রকাশ পাচ্ছে। আমারটাও যদি প্রকাশ পায় তাহলে আমার মিডিয়ায় কাজ করা তো ঐদিনই শেষ হবে, আব্বু, দাদা (বড় ভাই) আমাকে খুন করে ফেলবে। 
    - আরে ধুর....
    - আপনি বিষয়টি যেভাবে ধুর বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন বিষয়টা ততটা হাল্কা না টিটো ভাই। আমার জীবন শেষ। 
    - শোন, মাথা ঠান্ডা করো। কিছুই হবে না, তুমি কি ওর ফেইজবুক ফ্রেন্ড? 
    - না। 
    - কখনও ছিলে? 
    - না। 
    - তোমার সাথে ওর সেলফি ওর ফেইজবুকে আছে? 
    - তা তো জানি না। 

    আমি মেয়েটার ভীতি বুঝতে পারলাম। এমন ভীতিতে হয়তো অনেক স্টার সুপার স্টারই রয়েছেন। আমি হলে আমিও থাকতাম। আব্দুল হাকিম বা হালিম নামক এক ধর্ষক প্রতারক বছর দুই আগে নাঈম আশরাফ নাম ধারণ করে প্রতারণার নতুন কৌশল নিয়ে এক সোনা ব্যবসায়ির পোলার মেয়ে সাপ্লায়ারের কাজ নেয়। আশ্রয় নেয় ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের আড়ালে। সেখানে নানা কাজে ছেলে মেয়ে অনেক স্টার সুপার স্টারকেই যেতে হয়।

    Collected from Facebook আব্দুল হাকিম ওরফে নাঈম আশরাফ  
    সস্তা দরের জনপ্রিয়তার জন্য কাজের সময় স্টার সুপারস্টারদের সাথে অনেকেই ছবি তুলতে চায়। তাদের মধ্যে অনুষ্ঠানের মূল আয়োজক থেকে শুরু করে প্রডাকশন বয় লাইট ম্যান ট্রলিম্যান সবাই যে কেউ হতে পারে। না করা সম্ভব হয় না। সেখানে নাঈম আশরাফ যখন যোগাযোগের দায়িত্বে থাকে তখন শুরু থেকেই অর্টিস্টদের সাথে একটা অন্ডারস্টান্ডিং হয়ে যাওয়াটাই সাভাবিক। তখন কে জানত যে নাঈম আশরাফ একটা ধর্ষক? 

    তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে ভিক্ষুককে যদি কোন স্টার ভিক্ষা দিতে যায় সেও হয়তো বলবে 'খারান আফা একখান সেলফি তুলি...’ সোনা ব্যবসায়ির পোলার এই ধর্ষেনর খবরটা যখন সামনে আসে তখন অনেকেরই কপাল খুলে যায়। একেকজন একেক ভাবে একেক ধরনের সুবিধা আদায়ের ধান্দায় নেমে পড়েছে। আমাদের সমাজের রুচিহীন কিছু মানুষ নাঈম অশরাফের মতোই লাইক কমেন্টের আশায় সেই সকল ছবি দিয়ে নিজের ইচ্ছে মতো মালমসলা মাখিয়ে একের পর এক পরিবেশন করে যাচ্ছে যারা কখনওই নাঈম আশরাফের কাছ থেকে কোন কল পায়নি। এক ধরনের অনলাইন পত্রিকা সেই ছবি আর জঘন্য সাব-এডিটরদের অপেশাদার কুরুচিপূর্ণ কাঁচা গুয়ের মতো লেখাকে পুঁজি করে ব্যাসায় নেমেছে। তাতে করে যার সেলফি নিয়ে বিজনেসে নেমেছে তার ব্যক্তি জীবনের গুষ্টি যে লাটে উঠে যাচ্ছে তাতে কারো থোরাই কেয়ার! আরে মিডিয়ার লোকের আবার কিসের বালের ব্যক্তি জীবন? 


    কিন্তু ভাই সবাই তো আর এক না। সবার ব্যক্তি জীবন তো আর আপনি চর্চা করে বসে নাই। প্রত্যেকটি মিডিয়া ম্যানেরই (স্টার, নন স্টার, সুপার স্টার সবাই) ব্যক্তি জীবন রয়েছে। সেখানে আমাদের বাবা আছেন, মা আছেন, স্ত্রী আছে, ভাই বোন আছে। আমাদেরও সুখ দুঃখ আছে। আমরাও মানুষ। ক্ষুধা পেলে আমরাও আপনার মতো খাই। সবার জীবন আপনার ভাবনার মতো নাও হতে পারে।



    এখন যদি কেউ প্যানিক্ড হয়ে সুইসাইড করে বসে তার দায় কে নেবে? নাঈম আশরাফের নামে যখন ধর্ষনের অভিযোগ অনা হলো তখন কি পুলিশের দায়িত্ব ছিলো না ওর ফেইসবুক অ্যাকাউন্টটা নিজেদের হেফাজতে নেয়া? মানুষের অনুমতি ছাড়া তাদের ছবি পত্রিকা ওয়ালারা তথ্যপ্রযুক্তি আইনে কি শাস্তি তা আমার জানা নেই। তবে যাদের ছবি অনুমতি ছাড়া ছেপে রস নিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ। শাস্তি পাওয়া উচিৎ এই সকল যঘন্য মেন্টালিটির সকল মানুষরুপি জানোয়ারদের। 
    সকল ধরণের কপিরাইটঃ সাইফুল বাতেন টিটো
    ১৮ মে, ২০১৮

    No comments